খিচুড়ি রান্না র রেসিপি
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। শুধু এটাই প্রশ্ন ,বৃষ্টির দিনগুলো আপনাদের কেমন কাটছে। বৃষ্টি তো সবার ভালো লাগে মনে হয়। কিন্তু এত অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত কি আপনাদের ভালো লাগে? আমার কিন্তু সব সময় বৃষ্টি পছন্দ. গরম সহ্য হয় না বলেই বৃষ্টি পছন্দ । অন্তত বৃষ্টির দিনে ঠান্ডা ঠান্ডা ওয়েদার থাকে গরম লাগে না। প্রাকৃতিক হওয়া আজাই আলাদাই মজা।
তবে আমার এই বৃষ্টি ভালোলাগা অনেক জনকে আবার বিরক্তি দিচ্ছে। যখন বলছি বৃষ্টি হচ্ছে তো কি হচ্ছে। তখন রীতিমতো ওরা সবাই বকাবকি করছে ,বলছে সব কি তোর একার মতো হবে!!। আশেপাশের মানুষজনের তো অসুবিধা হচ্ছে।চারিদিকে মানুষজন ঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না ।সেটা তো দেখতে হবে।
তো সে দিক থেকে দেখতে গেলে অবশ্যই মানুষজনের খুবই অসুবিধা হচ্ছে এই ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে। তাই ভগবানকে আমিও ডাকছি যেন বৃষ্টিটা একটু কমে যায়।
যাইহোক এই বৃষ্টির দিনে আপনাদের সাথে দুর্দান্ত একটা রেসিপি শেয়ার করতে চলেছি। যদিও রেসিপিটা অনেক সহজ। আপনারা সকলেই জানেন ।এর সত্ত্বেও যেহেতু আমি প্রথমবার নিজের হাতে বানিয়েছি, তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করব বলে ছবি তুলে রেখেছিলাম।।
আপনারা সবাই খিচুড়ি রান্না করতে তো জানেন ।তবে আমি সত্যি কথা বলতে জানতাম না ।সেদিনকে একা একাই চেষ্টা করেছি আর দুর্দান্ত খেতে হয়েছিল। তাই আমি কিভাবে খিচুড়ি রান্না করলাম, সেটাই আজকে আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করে নিচ্ছি।
চলুন উপকরণগুলো দেখে নেয়া যাক।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | চাল | ৩০০ গ্রাম |
২ | ডাল | ২৫০ গ্রাম |
৩ | নুন | পরিমাণ মতো |
৪ | হলুদ | পরিমাণ মত |
৫ | সবরকম সবজি | পরিমাণ মতো |
৬ | আদা বাটা | এক চামচ |
৭ | ধনে গুঁড়ো | ১ চামচ |
৮ | জিরে গুঁড়ো | ১ চামচ |
৯ | জল | পরিমাণ মতো |
১০ | শুকনো লঙ্কা | দুটো |
১১ | তেজপাতা | দুটো |
১২ | পাঁচ ফোরণ | ১ চামচ |
১৩ | ঘি | এক চামচ |
১৪ | চিনি | হাফ চামচ |
প্রথম ধাপ
এখানে আমি চাল আর ডাল নিয়ে নিয়েছি। ভালো করে সবকিছু ধুয়ে নিচ্ছি। পরিমাণ উপকরণ লিস্টে দেওয়া আছে।
দ্বিতীয় ধাপ
ভাতের হাড়ি বসিয়ে তাতে জল দিয়ে দিয়েছি । জলের মাত্রাটা আমরা যেমন ভাত করি ঠিক সেই ভাবেই দিতে হবে। আর জলটা গরম হতে দেব।
তৃতীয় ধাপ
ধুয়ে রাখা চাল ডাল দিয়ে দেবো ভাতের হাড়ির মধ্যে। আর তার সাথে দিয়ে দেবো এক চামচ মত লবণ আর হলুদ। ভালোভাবে ঘেটে ঢাকনা দিয়ে রেখে দেবো সিদ্ধ হবার জন্য।
চতুর্থ ধাপ
একটা কড়াই গরম হওয়ার জন্য ওভেনে বসিয়ে দেবো। এবার কড়াই গরম হয়ে গেলে দিয়ে দেব তাতে সর্ষের তেল। তেলটা কেও গরম করে নেব।
পঞ্চম ধাপ
এই পর্যায়ে সব রকম সবজি দিয়ে ,নুন হলুদ দিয়ে দেব তাতে । আমি এখানে ক্যাপসিকাম, গাজর ,বিন্স, টমেটো, সাথে চারটে কাঁচা লঙ্কা ব্যবহার করেছি। নুন ,হলুদ দিয়ে মাখিয়ে নাড়াচাড়া করব।
ষষ্ঠধাপ
ওই সময় ওর মধ্যে দিয়ে দেবো এক চামচ মত আদা বাটা। আবার ভালোভাবে সবজি গুলোকে ভেজে নেব যতক্ষণ না আদার গন্ধটা ছাড়ছে ততক্ষণ ভাজতে থাকবো। তারপর একটু ঢাকা দিয়ে রাখবো ৫ মিনিটের জন্য। যখন ঢাকা দেবো তখন গ্যাসের আঁচটা একটু কমিয়ে রাখবো। এতে জিনিসগুলো একটু সিদ্ধ হয়ে যাবে।
সপ্তম ধাপ
ঢাকনা খোলার পর ওতে দিয়ে দেব ধনের গুঁড়ো আর জিরে গুড়ো। তারপর আবার সবজির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নেব।
অষ্টম ধাপ
৫-১০ মিনিট এইভাবে রান্না করে নিলেই আমাদের সবজির রান্নাটা তৈরি হয়ে যাবে।। এবার এটাকে ব্যবহার করতে হবে পরের পর্যায়ে।।
নবম ধাপ
আপনারা দেখতে পাচ্ছেন এখানে আমাদের ভাতও সিদ্ধ হয়ে গিয়েছে।
দশম ধাপ
ভেজে রাখা সবজিগুলো এবার ওই ভাতের হাড়ির মধ্যে ঢেলে দেব ,তারপর ভালোভাবে সবকিছু মিশিয়ে নেব হাতা দিয়ে।
একাদশ ধাপ
এবার কড়াইয়ে তেল গরম করে তাতে সামান্য গোটা জিরে, দুটো শুকনো লঙ্কা, তেজপাতা, পাঁচফোড়ন, আরো চারটি কাঁচা লঙ্কা ভালো করে ভেজে নেব।
দ্বাদশ ধাপ
এবার সবকিছু তেল সহকারে ওই ভাতের হাড়ির মধ্যে ঢেলে দেবো।। এটাকে ফোড়ন দেয়া বলে।
ত্রয়োদশ ধাপ
এবারে এক চামচ ঘি এবং পরিমাণ মতন চিনি ওর মধ্যে দিয়ে দেব। এবং সবকিছু ভালোভাবে মিশিয়ে নেব।
শেষ ধাপ
সব কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর, হাঁড়িটাকে মোটামুটি পনেরো মিনিটের জন্য ঢাকা দিয়ে রেখে দেবো।
তারপর তো যখন ঢাকনা খুলবেন তখন আলাদা একটা গন্ধ পাবেন। এইভাবেই খুব সহজে নিরামিষ খিচুড়ি আপনারা বানিয়ে নিতে পারেন। বৃষ্টির দিনে এত সহজ পদ্ধতিতে খিচুড়ি বানিয়ে খাওয়ার মজাই আলাদা। যেহেতু আমি প্রথমবার বানাচ্ছিলাম তাই আমার ভীষণ মজা লাগছিল।
আমি জানি খিচুড়ি এক এক জন একেক রকম ভাবে বানান। তবে আসল জিনিস তো চাল আর ডাল। সে আপনি যেভাবেই বানান। আমার এই পদ্ধতিটা সহজ মনে হয়েছে তাই এই ভাবেই আপনাদের শেয়ার করলাম। আশা করছি আমার পোস্ট আপনাদের সকলের ভালো লেগেছে। সকলে ভালো থাকবেন। আজকে এখানেই শেষ করছি।